সিরাজগঞ্জ,চৌহালী প্রতিনিধি :
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক তারেক আজিজ সজিব বল সুন্দরী কুল বা বরই চাষে পাল্টে গেছে তার ভাগ্য। তার বরই বাগান দেখে আগ্রহী হচ্ছে উপজেলার অনেক কৃষক। এই দুর্গম এলাকায় তিনিই প্রথম এই বল সুন্দরী ও অস্ট্রেলিয়ান বরই চাষ শুরু করেন। জানা গেছে, উপজেলার পূর্ব খাষকাউলিয়া নামক প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুল মাস্টার হালিমের একমাত্র ছেলে তারেক আজিজ সজিব । ছাত্র জীবন থেকেই তিনি কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সাইখ সিরাজের ভক্ত। তার মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান দেখে ফলের বাগান করার প্রবল ইচ্ছা ছিল তারেক আজিজ সজিবের । এসএসসি পাশ করার পর ২০১৯ সালের চাকরি পান তারেক আজিজ সজিব । ২০২০ সালে মার্চ মাসে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে ছুটিতে বাড়িতে আসেন। এ সময় বাবা আব্দুল হালিম মাষ্টারের পরামর্শে ছেলে বাড়ির পাশে ৬৬ শতাংশ জমিতে কুল চাষের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। গত বছর মে মাসে রংপুর ও মাগুরা থেকে সাড়ে চারশত ’বল সুন্দরী ও অস্ট্রেলিয়ান কুলের চারা এনে ওই জমিতে রোপণ করেন তিনি। তারেক আজিজ সজিব অক্লান্ত পরিশ্রম ও পরিচর্যায় মাত্র ৮/৯ মাসের মাথায় গত ডিসেম্বরে সবকটি গাছেই থোকায় থোকায় কুল ধরে। এখন প্রতিটি গাছে ঝুলছে থোকায় থোকায় পাকা কুল। এই কুলে এক বছরেই পাল্টে দিয়েছে কৃষক তারেক আজিজ সজিবের ভাগ্য। প্রথম বছর কুল চাষে ৮০ হাজার টাকা ব্যয় করে প্রথম বছরেই তিনি বিক্রি করেছেন ২ লক্ষ টাকা। তবে এই কুল চাষে তেমন খরচ নেই বলে জানান কৃষক তারেক আজিজ সজিব । শুধু চারা সংগ্রহ করতেই সমস্যা। ফলন ভালো হওয়ায় তিনি এ বছর আরো ৪০ শতাংশ জমিতে এ কুল চাষ করবেন। ইতিমধ্যে তিনি চারা সংগ্রহ করে জমি প্রস্তুত করেছেন। তার দেখাদেখি ওই এলাকার অনেক কৃষক এ কুল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। অনেকে তার মাধ্যমে রংপুর ও মাগুরা থেকে চারা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান কৃষক তারেক আজিজ সজিব । বৃহস্পতিবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়ান জাতের বল সুন্দরী গাছের প্রতিটিতে থোকায় থোকায় কুল ঝুলছে। সুস্বাদু বাহারি রংয়ের কুল তিনি গাছে থেকে পেড়েই বিক্রি করছেন। পোকা ও পাখির আক্রমণ থেকে রক্ষায় বাগানের চারিপাশে মশারী জালের বেড়া দিয়েছেন। বল সুন্দরী কুল চাষ করে তিনি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। এ বছর তার কুল বিক্রি প্রায় শেষ। তারেক আজিজ সজিব বলেন, আমার এক আত্মীয়ের অনুপ্রেরণায় আমি কুল চাষের জন্য ৬৬ শতাংশ জমিতে বল সুন্দরী কুলের চাষ করেছি। ভাবিনি প্রথম বছরেই এতো ফলন হবে।