ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন এর মৃত্যুর খবর শোনার পর একটি কথা শুধু মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
কথাটি হলো, আমরা আমাদের অভিভাবকদের কে হারিয়ে ফেলছি। আলোকিত মানুষ গুলো চলে যাচ্ছে আমাদের ছেড়ে। আমাদের মাথার ওপর থেকে ছায়া গুলো সরে যাচ্ছে।
আমাদের ভবিষ্যৎ কি??
সেই একটি কথা। আমাদের ভবিষ্যৎ কি??
তরুণ প্রজন্ম কি তাঁদের মতো অসাম্প্রদায়িক চেতনা কে মনের মধ্যে ধারণ করছে??
যদি ধারণ করে থাকে তাহলে সাধুবাদ জানাই। আর যদি ধারণ না করে থাকে তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ কি অন্ধকার??
এই প্রশ্নের কোন উত্তর পাচ্ছি না।
আমাদের অগ্রজ, প্রগতিশীল আন্দোলনের পুরোধা ব্যাক্তিত্ত্ব, আমাদের অভিভাবক, ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন আর আমাদের মাঝে নেই।
আমাদের একা করে দিয়ে চলে গেছেন অসীমে।
আমরা অভিভাবক শুন্য হয়ে পড়লাম।
ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনে রাজশাহীতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বায়ান্ন পরবর্তী প্রগতিশীল সব আন্দোলন-সংগ্রামের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল। শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও কিছুদিন আগে তিনি রাজশাহীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন। গত ১৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানেও তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি রাজশাহীর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন আজ বুধবার বিকেল ৪টার সময় মৃত্যুবরণ করেন। সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহী বড়কুঠি মুক্ত মঞ্চে চলমান বইমেলা প্রাঙ্গনে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে ১মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।
সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত রাজশাহী ভুবন মোহন পার্কে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয়। সেখানে রাজশাহীর সকল প্রগতিশীল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তাঁর মৃত্যুর এই শোক কে শক্তিতে পরিনত করে একটি কথা বলতে চাই,অবিলম্বে বাংলাদেশের ভাষা সৈনিক দের তালিকা প্রস্তুত করে তাঁদের সম্মানিত করার ব্যবস্থা করা হোক।
আমরা ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন এর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।ভাষাসৈনিক আবুল হোসেনের যে অবদান তা জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
লেখকঃ
নাফিউল হক নাফিউ
— সাংস্কৃতিক কর্মী।।