পদ্মাসেতু উদ্ধেধনের পর বাঙ্গালির আনন্দের রেশ কাটেনি এখনো। এরই মধ্যে গা ভাসিয়েছি মেট্রোরেলের বিজয়োল্লাসে। রাজধানীর বুকে সবুজ পতাকা নিয়ে চলা শুরু করেছে মেট্রোরেল।বিজয়ের মাসে এটি যেন আরেক বিজয়।

শেখ হাসিনার দূরদর্শীতা, কর্মদক্ষতা এবং আধুনিক ও বিশ্বমানের চিন্তাধারনার কারনেই আজকের এত বড় মেঘা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে, যেগুলো বাংলাদেশের মানুষ কখনো স্বপ্নেও ভাবেনি।স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙালির সবচেয়ে বড় বিজয় এ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন।

পদ্মাসেতু চালু হয়েছে, মেট্রোরেল হলো, সামনে আবার বঙ্গবন্ধু টানেল। দেশের গণপরিবহন-যোগাযোগ ব্যাবস্থা এখন বিশ্বমানের। এবছরের ২৫ জুন এশিয়ার দীর্ঘতম সেতু পদ্মাসেতু উদ্ধেধন হওয়ার পর রাজধানীর সাথে সংযুক্ত হলো দক্ষিণের ১৯ জেলা। সমৃদ্ধ হয়েছে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অর্থনীতি।

এবার রাজধানীর মানুষ পেয়েছে বিশ্বমানের গণপরিবহন। শহরের উপর দিয়ে চলছে মেট্রোরেল। ২৮ ডিসেম্বর (বুধবার) সকালে দেশের প্রথম মেট্রোরেল পরিষেবার প্রথম ধাপের উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে উত্তরা টু আগারগাঁও পর্যন্ত সাধারন যাত্রী নিয়ে চলছে মেট্রোরেল। ১১.৭৩ কিলোমিটার পথ যেতে পারবে ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ডে। বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস ও আনন্দ নিয়ে ভোর থেকে মানুষ স্টেশন ভিরছে এ সেবা নিতে। এক ভিক্ষুক টাকা জমিয়ে ঘুরতে উঠেছে মেট্রোরেলে। এসব মানুষ মন থেকে শেখ হাসিনাকে আশির্বাদ করছে।

১৮৫৩ সালে বিশ্বে প্রথমবারের মত লন্ডনে মেট্রোরেল চালু হয়। এখন পর্যন্ত ৫৬ দেশের ১৭৮ শহরে মেট্রোরেল চলছে, তার মধ্যে বাংলাদেশের ঢাকা একটি। ভাবতেই অবাক হই কত আধুনিক আমরা এখন! কত সময় সেইভ হবে কোটি মানুষের। যান্ত্রিক এ নগরিতে যানজটকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে চলাফেরা-যোগাযোগ হবে স্বস্তির-শান্তির।

মেট্রোরেলে ব্যবহারেও বিশ্বমানের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। প্রতিটি স্টেশনে থাকছে দুটি লিফট, দুটি এস্কেলেটর ও দুটি সিঁড়ি, থাকবে প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম, ট্রেনের অবস্থান দেখার জন্য থাকবে একাধিক ডিজিটাল মনিটর। স্টেশন হকার ও কুলিমুক্ত। মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভাড়া ৬০ টাকা। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ট্রেন চলবে উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত। তখন ওই দূরত্বের ভাড়া হবে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। ২০২৩ সালে উত্তরা টু মতিঝিল, ২০২৫ সালে উত্তরা টু কমলাপুর যাতায়াত করবে মানুষ।

মেট্রোরেল ব্যবহারে জ্বালানী তেল, গ্যাসের ব্যাবহার কমবে, নগরবাসী পরিবেশ দূষন থেকে বাঁচবে। রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থায় সুশৃঙ্খল আসবে। যাতায়াতের সময় বাঁচবে, সঠিক সময় পরিকল্পনা করে চলতে পারবে। এতে মানুষের শারিরীক মানসিক অবসাদ কমবে। বেঁচে যাওয়া সময়টুকু অন্য কাজে ব্যবহার করবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাস শেষে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করা সহজ হবে। সব মিলিয়ে মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে।

বিশ্বের খুব কম দেশেই আছে মেট্রোরেল। যেসব দেশে মেট্রোরেল আছে, তারাও এমন সুবিধা পাচ্ছে। বিশ্বের গণপরিবহনের সাথে তাল মিলিয়ে আজ আমরা মেট্রোযুগে। বঙ্গবন্ধু টানেলসহ সামনে বিশ্বমানের আরো চমক আনছে শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ ও মানুষের স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রুপ দিতে বিশ্বনেত্রী নিরলস পরিশ্রম করছেন।

সোহাগ রাসিফ
-আহ্বায়ক
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি