শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ফুলবাড়ীতে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে স্মরণ সভা অনুষ্টিত সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় টাংগাইলের মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিহত রাজশাহী নগরীতে ময়লা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে পুকুর রায়গঞ্জে ভূঁইয়াগাঁতী বাসস্ট্যান্ড দখল করে অবৈধ দোকানপাট ও সিএনজি স্ট্যান্ড নড়াইলে চিত্রশিল্পীদের হাতে চিত্রকর্মের সম্মাননা স্মারক প্রদান নড়াইলে পৃথক অভিযানে একাধিক মামলায় দুই সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার শিল্পী সমিতির নির্বাচন : সভাপতি মিশা, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল রাজশাহী নিউ মার্কেটের দোকানে অগ্নিকাণ্ড পাইকগাছায় ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ ছাতকের জাউয়া বাজারসহ তার আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

তামিল সিনেমার আদলে অ্যাকশন দৃশ্য বানিয়ে আলোচনায় দৌলতখানের তরুণরা

তামিল সিনেমার আদলে অ্যাকশন দৃশ্য বানিয়ে আলোচনায় ভোলার দৌলতখানের ছয় তরুণ তাক লাগিয়ে দিয়েছে ছয় তরুণ ও তাদের বন্ধুরা।

তামিল সিনেমার আদলে অ্যাকশন দৃশ্য তৈরি হয়েছে সাধারণ মোবাইল ফোনের কারসাজিতে।বিস্ময়কর কাজটি ধারাবাহিকভাবে করে চলেছে দৌলতখানের ছয় তরুণ ও তাদের বন্ধুরা।

ছিল না কোনো পেশাদার ক্যামেরা বা ক্যামেরাম্যান। ১০ হাজার টাকার একটি মোবাইল ফোনেই হচ্ছে দৃশ্যধারণ থেকে সম্পাদনার সবকিছু।তারা দেখিয়ে দিয়েছেন প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারই স্বল্প বাজেটে যেকোনো দৃশ্য ধারণ করা সম্ভব।

করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ।এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অ্যাকশন দৃশ্য তৈরি করে সারা দেশে প্রশংসায় ভাসছে ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুরের এলাকায় এই ছয় তরুণ।

প্রশিক্ষণ বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বলতে এখনো কলেজের গন্ডি পেরোতে পারেনি তাদের কেউ।তাদের মধ্যে কয়েকজন এসএসসি শেষ করেছে।

তাদের সঙ্গে আছে থাকা মো. ইব্রাহিম ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আরিয়ান রুদ্র, মো. শাকিব খান মাধ্যমিক কিংবা কলেজ পড়ুয়া।

তারা জানায়, দৗর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ তাই সারাদিন খেলার মাঠে, সোশ্যাল মিডিয়া বা গেমস খেলে সময় নষ্ট না করে ভিন্ন কিছু করার পরিকল্পনা থেকেই এমন উদ্যোগ।

ক্ষুদে নির্মাতাদের মনে প্রশ্ন ছিল, অন্য দেশের ইউটিউবাররা পারলে আমরা পারবো না কেন? আর এই ইচ্ছা শক্তি নিয়েই সাত মাস আগে ’Saymon action official নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে তারা।এই চ্যানেলেই নিয়মিত নিজেদের তৈরি অ্যাকশন ভিডিও আপলোড করে যাচ্ছে তারা। তরুণদের দাবি, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে আরও উন্নত কিছু করে দেখাতে পারবে তারা।

বেশ কিছু সিনেমার অ্যাকশন দৃশ্যের অনুকরণে তারা ভিডিও নির্মাণ করেছে।অনেকেই বলছেন,তারা তামিল মুভির অ্যাকশন দৃশ্য অবিকল ধারণ করেছে।দেখে মনে হতেই পারে দৃশ্যগুলো বাইরের দেশে বড় বাজেট নিয়ে ইউটিউবারদের তৈরি।

উন্নত প্রযুক্তি নেই বলে হাল ছাড়েননি এ ক্ষুদেরা।সাধারণ একটি মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে ধারণ করা হয় যাবতীয় দৃশ্য। শুটিংয়ে ব্যবহার করা হয় পথের ধুলো মিশ্রিত ময়দা ও কাঠের তৈরি দেশীয় খেলনা অস্ত্র।ভিডিও সম্পাদনায় ব্যবহার হয় কিছু সফটওয়্যার।আকার ও প্রকার ভেদে একটি ভিডিও তৈরি করতে তাদের সময় লাগে পাঁচ থেকে সাতদিন।সব কাজ শেষে দৃশ্যের সঙ্গে মূল সিনেমার সাউন্ড ইফেক্ট জুড়ে দেয় তারা।

তাদের তৈরি ভিডিও দেখে দেশের অনেক পেশাদার নির্মাতাদের কাজের মান নিয়েও সমালোচনার ঝড় বইছে সোশ্যাল মিডিয়াতে।আবার সারা দেশে কিশোর গ্যাং-এর দৌরাত্ম্যের মাঝে এ ধরনের ব্যতিক্রমী কাজে সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে।

তাদের ভাষ্যে, আমরা প্রচুর তামিল সিনেমা দেখতাম। তারপর মাথায় আসে অ্যাকশন দৃশ্য করার। আর ভাবতাম, ভারতের ইউটিউবারেরা পারছে, আমরা কেন পারবো না?

ভিলেন চরিত্রের অভিনেতা মুরসালিন বলেন, আমি ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করি।এ কাজটি করতে গেলে আমাদের অনেক কষ্ট হয়।কারণ আমাদের কোনো সেফটি নেই।মাত্র ১০ হাজার টাকার একটি মোবাইল দিয়ে আমরা কাজ করে থাকি।যদি আর্থিকভাবে একটু সাপোর্ট পেতাম তাহলে আমরা আরও ভালো কিছু করে দেখাতে পারতাম।

পরিচালক সুফিয়ান খান বলেন, করোনার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় আমরা গেম নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। অনেকেই দেখেছি ইউটিউবিং করছেন।আমরা তামিল সিনেমা খুব দেখতাম।আমাদের মাথায় আসে তামিল সিনেমার মতো অ্যাকশন দৃশ্য ধারণ করবো।সারা দেশের মানুষ যে এটা এতো পছন্দ করবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। আমরা ভবিষ্যতে অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই। এ জন্য সবার সহযোগিতা চাই।

ক্ষুদে নির্মাতাদের পরিবার জানায়, প্রথম দিকে তারা এ কাজে সমর্থন করেনি।পরবর্তীতে তারা পরিবারকে বোঝাতে সক্ষম হয় যে,ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে।সারা দেশের মানুষ তাদের নিয়ে প্রশংসা করছেন।কিন্তু পরিবার চায়, তারা আগে পড়াশুনা করুক, পাশাপাশি বাকি কাজ চালিয়ে যাবে।

এলাকাবাসীরও এমন প্রত্যাশা প্রতিভাবান এ তরুণদের কাছ থেকে।

কবি মোঃ ছিদ্দিক বলেন, তাদের এই সৃজনশীল ভাবনাকে আমি পজিটিভ মনে করছি।যেহেতু স্কুল-কলেজ বন্ধ, সে ক্ষেত্রে তারা বখাটে হয়ে যেতে পারতো, নেশাগ্রস্ত হতে পারতো।তারা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে কাজটি করেছে তার জন্য সাধুবাদ জানাই।যদি তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়, তাহলে বাংলা সিনেমাতে তারা ভূমিকা রাখতে পারবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × one =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x