অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, রাজশাহীর ক্যারেজ ডিপোর ফিটার পদে কর্মরত এম এ মান্নান বাবু বিভিন্ন সময়ে দায়িত্বে অবহেলা, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে কর্মস্থলে নিয়মিত অনুপস্থিত থাকার তথ্য পাওয়া যায় এবং তার অনুপস্থিতির বিষয়টি সবাই অবগত।এছাড়াও বিষয়টির সত্যতা যাচাই করার জন্যস্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে।
তার অনুপস্থিতির বিষয়টি এতটাই স্বীকৃত যে কিছুদিন পূর্বে প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (পশ্চিম) রাজশাহী মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা আকস্মিক পরিদর্শন এসেও এম এ মান্নান বাবুকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পান।
এ বিষয়ে ডিপো ইনচার্জের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাকে বিধি মোতাবেক কাজে যোগদান করার কথা বললে তিনি তা না করে পরের দিন হতে নিয়মিত স্বাক্ষর করে অফিস করছেন।
বর্তমানে তিনি শ্রমিকলীগের একনিষ্ট কর্মী হিসাবে দাবি করলেও লোকমুখে ও প্রাক্তন একাধিক বিএনপির নেতাকর্মী ও রেলওয়ে শ্রমিক দলের একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিএনপির দলীয় কোঠায় বিএনপি সরকারের সুবিধা নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন করে রেলওয়ের এই চাকুরী নিয়েছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যায়।
যেমন তার জন্ম তারিখ বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, তার জন্ম তারিখ ১৯৮০ এবং তার মেয়ের জন্ম তারিখ ১৯৯০ অর্থ্যাৎ তিনি মাত্র ১০ বছর বয়সে বাবা হয়েছেন যা বিশ্ব রেকর্ডের সামিল।
তার নামে ভূয়া মেমো সংগ্রহ করে রাষ্ট্রীয় লক্ষ লক্ষ টাকার টিএ ও ওটি তোলা, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা থাকলেও নিয়মিত টিএ নেওয়া, ব্যক্তিগত কাজে কোথাও গেলে সরকারী টিএ নেওয়া, কাজ না করেও ওটি নেওয়া নেয়ার তথ্য পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট হেড টিএক্স আর কোরবান আলীর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মাত্র ৮ মাস হলো দায়িত্ব নিয়েছি এই সময়ে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।তবে পূর্বে কি হয়েছে সে বিষয়ে আমার জানার কথা না।তবে যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে সেটা প্রসাশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
ওটি স্বাক্ষরের জন্য আপনার নিকট দেয়া হলে আপনি তা স্বাক্ষর করতে অস্বিকৃতি জানান এবং পূর্বে বনলতা এক্সপ্রেস রাজশাহীর লোক চাঁপাই গিয়ে নিয়মিত ট্রেন ফিট দিতো যা আপনি বন্ধ করে দেন।উত্তরে কোরবান আলী জানান, নিয়মতান্তিকভাবে যে যারা যারা প্রাপ্য তা নিয়মিতভাবেই দেয়া হচ্ছে আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ গিয়ে রাজশাহীর স্টাফ দিয়ে বনলতা এক্সপ্রেস ফিটের বিষয়টি বাতিল করা হয় ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে।এসব বিষয় নিয়ে মান্নান বাবুর খারাপ ব্যবহার করা, আপনার বদলীর হুমকি এবং দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে এসে হেয় প্রতিপন্ন করা ও অনৈতিক সুবিধা প্রদানের জন্য চাপ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বদলী একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ যখন চাইবেন তখনই বদলী করতে পারবেন এতে কোন বিধি নিষেধ নেই।
তবে ডিপোর একাধিক কর্মচারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এম এ মান্নান বর্তমান হেডটিএক্সআরকে রাজনৈতিক ভাবে বিভিন্ন উপায়ে হেয় প্রতিপন্ন করছেন।বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ তুলে ভূয়া স্বাক্ষর সংগ্রহ করে তাকে বদলী করে পূর্বের হেড টিএক্সআরকে রাজশাহী ডিপোর হেড টিএক্স আর করার জন্য কাজ করছেন।যিনি পূর্বে প্রায় ৮ বছর যাবৎ রাজশাহী ডিপোর হেডটিএক্সআর ছিলেন।সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ৩ বছর পর পর বদলীর বিধান থাকলেও তিনি ৮ বছর একই পদে এবং একই স্থানে কর্মরত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মান্নান বাবু বলেন, আমার বিষয়ে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে এগুলো সব মিথ্যা আমাকে রাজনৈতিকভাবে হে প্রতিপন্ন করার জন্য একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল জোনের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই।যদি কেউ এমন অনিয়মের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।